অনলাইন ডেস্ক | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বর ও শরীর ব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া এক কিশোরী হাসপাতালের অভ্যন্তরেই ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ৯ দিন পর শনিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের এক ওয়ার্ড বয় ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও স্থানীয়দের চাপে প্রায় ৯ দিন পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
জানা গেছে, পুরো হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরাবেষ্টিত। ভুক্তভোগীর পরিবারের দাবি, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরায় ওই দিনের ফুটেজ দেখলে ধর্ষক শনাক্ত করা যাবে।
সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মামুনুর রশীদ জানান, এ ঘটনায় শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম সাদিককে প্রধান ও ডা. মুনিরুজ্জামানকে সদস্য সচিব করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে। হাসপাতালের ভেতরে এ ঘটনা যার দ্বারা ঘটুক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, ১১ সেপ্টেম্বর ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়। তখন হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন ডা. স্বপন কুমার সুর, নার্স দুলালী, সুমি আক্তার ও ওয়ার্ড বয় মাজেদুর রহমান।
ধর্ষিতার মা জানান, ৩ সেপ্টেম্বর তার মেয়েকে জ্বর ও শরীর ব্যথা নিয়ে সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করি। সে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে ১২ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র (ছুটি) দেবে বলে ১১ সেপ্টেম্বর রাতে নার্সরা জানান। ১১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের এক যুবক তাকে ধরে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
মেয়েটি এক পর্যায়ে অজ্ঞান ও রক্তাক্ত হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। এদিকে তরুণীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে ওই রাতেই তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্মরত চিকিৎসক।
এদিকে ধর্ষিতার মা মেয়েকে বেডে না পেয়ে সামনে এগিয়ে দেখেন বারান্দায় পড়ে আছে মেয়ে। কাছে গিয়ে দেখেন তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ সময় ধর্ষিতার মা ডাক্তার-নার্স ডাকলে নার্সরা ওই তরুণীর অবস্থা বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি করে ডাক্তার ডেকে আনেন। পরে চিকিৎসক ধর্ষিতাকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, আমি একজন হতদরিদ্র ও ভ্যানচালক। ধর্ষককে আমি ও আমার স্ত্রী চিনতে পারিনি। হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ওই ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে ধর্ষককে চেনা যাবে। আমি গরিব বলে মেয়ের বিয়ের কথা চিন্তা করে কাউকে জানাইনি এবং অভিযোগও করিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ওই সময় ডাক্তার বা নার্সদের ডেকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. এরফান আনসারী জানালেন, ১২ সেপ্টেম্বর এক কিশোরীকে ভর্তি করা হয়েছিল। তার গোপনাঙ্গে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণসহ ছিঁড়ে যাওয়ায় ক্ষতস্থানটি রিপিয়ার করে দেয়া হয়েছে।
সাটুরিয়ার ইউএনও আশরাফুল আলম বলেন, চিকিৎসা নিতে আসা তরুণী ধর্ষণের ঘটনা ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়। হাসপাতালের ভেতরে এমন ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। কেউ দোষী হলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
shikkhasangbad24.com | hossain reaz
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ |
১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ |
২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ |
২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |