• সোমবার ২৭শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ১৩ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

    শিরোনাম

    সংসার করার শর্তে ৫০ জনকে খালাস, ফুল দিয়ে বরণ করলেন স্ত্রীরা

    অনলাইন ডেস্ক | ২৫ নভেম্বর ২০২০ | ৭:২৫ অপরাহ্ণ

    সংসার করার শর্তে ৫০ জনকে খালাস, ফুল দিয়ে বরণ করলেন স্ত্রীরা

    সুনামগঞ্জে পারিবারিক বিরোধ ও নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর করা ৫০টি মামলার আসামিদের সাজা না দিয়ে দাম্পত্য জীবনে ফিরে যাওয়ার শর্তে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।

    বুধবার বেলা ১টায় সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ ব্যতিক্রমধর্মী রায় দেন।

    আদালতের হস্তক্ষেপে স্বামীরা নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরে আসবেন- এমন খবর পেয়ে ফুল নিয়ে এজলাসের সম্মুখে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন তাদের স্ত্রীরা।

    এ সময় অনেক স্ত্রীকে নিজের শিশুসন্তান কোলে নিয়ে স্বামীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

    আদালত সূত্র জানায়, নির্যাতনের শিকার হয়ে ওই ৫০ নারী তাদের স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছিলেন। মামলার ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যুদ্ধংদেহী অবস্থান তৈরি হয়। এতে তাদের সন্তানদের জীবন, নিরাপত্তা, খাদ্য, বাসস্থান, আদর-যত্ন, ভালোবাসা, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে।

    স্ত্রীরা স্বামীর ঘরছাড়া হয়ে সন্তান-সন্ততি নিয়ে এক অনিশ্চিত জীবনের পথে হাঁটছিলেন। সেই অনিশ্চয়তা জীবনের অবসান ঘটিয়ে সংসার-সমাজে শান্তি ও সৌহার্দের পরিবেশ সৃষ্টি করতে আসামিদের খালাস দেন আদালত।

    আদালত আরও জানান, শাস্তি নয় শান্তি, সম্প্রীতির সুবাতাস আর ফুলের গন্ধ বিলিয়ে মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে ৫০টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করে স্ত্রীকে স্বামীর কাছে আর স্বামীকে স্ত্রীর কাছে এবং সন্তানদের তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মা-বাবা উভয়ের সান্নিধ্য লাভের জন্য এ রায় দেয়া হয়েছে।

    এদিকে আদালত কর্তৃক ৫০ মামলার আসামিদের খালাস প্রদানের রায়ের পর স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

    এ সময় আদালত আঙিনায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় অনেক স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানদের। ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো ৫০টি সংসার আদালতের রায়ে জোড়া লাগার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মামলার বাদী-বিবাদী, আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষ।

    তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর এলাকার মোহাম্মদ মিয়া বলেন, ১৪ বছর আগে একই গ্রামের আমিনা খাতুনকে বিয়ে করি। আমাদের সংসারে চারটি সন্তান রয়েছে। দেড় বছর আগে পারিবারিক বিরোধের জেরে স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলায় তিন মাস হাজতবাস করতে হয়।

    তিনি আরও বলেন, মামলার ফলে আমাদের সংসার ভাঙার উপক্রম দেখা দেয়। সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আদালতের এমন রায়ে আমার ভাঙা সংসার জোড়া লেগেছে। আমি আমার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাকি জীবন সুখে-শান্তিতে কাটাতে চাই।

    সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জের আদালতের ইতিহাসে এটি একটি ব্যতিক্রমী রায়। আদালতের হস্তক্ষেপে সংসারগুলোতে শান্তির সুবাতাস ফিরে আসবে। এতে পারিবারিক ও সামাজিক ভিত্তি মজবুত হবে। এমন রায়ে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস আরও শক্তিশালী হবে।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ৭:২৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০২০

    shikkhasangbad24.com |

    advertisement

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    advertisement
    শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
     
    ১০
    ১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
    ১৮১৯২০২১২২২৩২৪
    ২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
    advertisement

    সম্পাদক ও প্রকাশক : জাকির হোসেন রিয়াজ

    সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: বাড়ি# ১, রোড# ৫, সেক্টর# ৬, উত্তরা, ঢাকা

    ©- 2023 shikkhasangbad24.com all right reserved