অনলাইন ডেস্ক | ১১ নভেম্বর ২০২০ | ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ
মিয়ানমারে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে রোহিঙ্গাসহ অন্য সংখ্যালঘুদের বাদ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের আরো বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। গতকাল মঙ্গলবার ‘২০২০ সালে মিয়ানমারে নির্বাচন এবং রোহিঙ্গা সংকটের ওপর এর প্রভাব’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন। ঢাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিস (সিপিএস) এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
এসআইপিজির সিনিয়র ফেলো ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিয়ানমারে নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করেছে যে কোনো রোহিঙ্গা ভোট দেওয়ার যোগ্য নয়। রাখাইন রাজ্যে এখনও যে রোহিঙ্গারা আছে তারা ভোটার তালিকায় নেই। কারণ তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করা হয় না।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে বেশ কিছু আসনে নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে। আরাকান ন্যাশনালিস্ট পার্টি দ্বারা প্রভাবিত ওই এলাকাগুলোতে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সমর্থন কম। সংঘাতময় এলাকার অজুহাত তুলে সেখানে নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া আসনগুলোতে আগামী এক বছরেও নির্বাচন হবে না।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিয়ানমারে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেনি। এনএলডি, সেনাবাহিনী ও সেনা সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)—সবাই বামার জনগোষ্ঠীর। যারা বামার জনগোষ্ঠীর নয় তাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মিয়ানমারের পার্লামেন্টে ২৫ শতাংশ আসন সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত আছে।
ওয়েবিনারের সঞ্চালক এসআইপিজির সিনিয়র ফেলো ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, মিয়ানমারের এই নির্বাচনকে অবাধ-সুষ্ঠু বলা যাবে কীনা তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে। সু চির দল প্রায় চারশ’ আসন পাওয়ার আশা করছে। ইউএসডিপি আরো নাজুক অবস্থায়। আরাকান ন্যাশনালিস্ট পার্টি এবার তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেনি।
সিপিএসের সমন্বয়ক ইশরাত জাকিয়া সুলতানা স্বাগত বক্তব্যে বলেন, একটি দেশ যখন তার জাতীয় নির্বাচন থেকে ২৬ লাখ লোককে বাদ দেয় তখন প্রশ্ন ওঠে যে সত্যিই দেশটি রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান চায় কীনা।
রোহিঙ্গা সংকটে ভারত প্রত্যাশিত ভূমিকা রাখেনি উল্লেখ করে ভারতের ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক নেহগিনপাও কিপগেন বলেন, ভারত তার দেশে থাকা ৪০ হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক কৌশলের কারণে ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আলী আশরাফ বলেন, নির্বাচনের নামে মিয়ানমারে প্রহসন হয়েছে এটি নিশ্চিত। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের ভূমিকাকে অবশ্যই আমলে নিতে হবে। রাখাইন রাজ্যে চীনের গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ থেকে আমরা ধারণা করতে পারি যে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা খুব সামান্য।’
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে ওই ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক এম জসীম উদ্দিন, কানাডার কনফ্লিক্ট অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক কাওসার আহমেদ, কানাডা রোহিঙ্গা ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের লিড স্ট্র্যাটেজিস্ট ও টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জেভিয়েট ইলম ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০২০
shikkhasangbad24.com | hossain reaz
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ||||
৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ |
১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ |
১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ |
২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |