• সোমবার ২৭শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ১৩ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ

    শিরোনাম

    মন্দ নামে ডাকা মারাত্মক গুনাহ

    অনলাইন ডেস্ক | ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ | ৪:৪০ অপরাহ্ণ

    মন্দ নামে ডাকা মারাত্মক গুনাহ

    একজন মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত চিরচেনা একটা শব্দ হলো তার নাম। এমনকি মানুষটা মারা গেলেও তার নাম রয়ে যায় পৃথিবীর মানুষের মুখে। একটি সুন্দর নাম একজন মানুষের কাছে হীরার চেয়েও দামি সম্পদ। কিন্তু বর্তমান সমাজে নাম নিয়ে ব্যঙ্গ (ট্রল) করা ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

    বিশেষ করে ফেসবুকে এবং বন্ধুবান্ধব মহলে একে অন্যের নামকে বিকৃত করে ডাকার প্রবণতা দিন দিন মহামারির মতো ছড়িয়ে যাচ্ছে। মানুষের নামকে বিকৃত করে কিংবা অপমানমূলক নামে ডাকা মারাত্মক গুনাহ এবং জঘন্য কাজ। আমরা অনেক সময় আড্ডার আসর জমাতে গিয়েও অন্যকে বিকৃত নামে ডেকে কথা বলে থাকি, যা ইসলাম অনুসারে অত্যন্ত গর্হিত এবং অন্যায় কাজ।

    এ সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন—মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গুনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই জালেম। (সুরা হুজুরাত, আয়াত নম্বর-১১)

    প্রতিটি মানুষের উচিত অপর ভাইকে সুন্দর নামে ডাকা এবং কারো নামকে বিকৃত করে কোনো ধরনের বিব্রতকর মন্তব্য না করা। অর্থাত্ ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে এমন নামে না ডাকা অথবা এমন খেতাব বের না করা, যা সে অপছন্দ করে। নাম বিকৃত করে অথবা মন্দ নাম বা খেতাবে ডাকা অথবা ইসলাম গ্রহণ বা তওবা করার পর তাকে অতীত ধর্ম বা পাপের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে সম্ব্বোধন করা; যেমন—এ কাফের ! ও ইয়াহুদি ! এ লম্পট ! এ মাতাল ! ইত্যাদি বলে সম্বোধন করা অতীব মন্দ ও গর্হিত কাজ। (ফাতহুল কাদির)

    অন্যকে ছোট মনে করা, কারো উপহাস করা ইসলামে নিষিদ্ধ। সমাজবদ্ধ জীবনে অন্যের মনোকষ্টের কারণ হয়, এমন কোনো কাজ থেকে বেঁচে থাকার জোর তাগিদ দিয়েছে ইসলাম। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন—যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিমরা নিরাপদ, সে-ই প্রকৃত মুসলিম আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে, সে-ই প্রকৃত হিজরতকারী? (বুখারি শরিফ)

    বর্তমানে সমাজে আরেকটা বিষয় ব্যাপকভাবে লক্ষণীয় তাহলো মহান আল্লাহতায়ালার গুণবাচক নামগুলোকে বিকৃত করা। অজান্তেই আমরা মহান আল্লাহতায়ালার গুণবাচক নামগুলো ব্যবহার করে হাসি তামাশা করছি, যা মারাত্মক গুনাহের কাজ। যেমন—অনেক সময় ফেসবুকে লক্ষ্য করা যায় একে অন্যের পোস্টে মজার ছলে কমেন্ট করছে কস কি মোমিন, বলিস কি কুদ্দুস, লিখে।

    অথচ মুমিন, কুদ্দুস এগুলো মহান আল্লাহতায়ালার গুণবাচক নামগুলোর মধ্যে অন্যতম। ইসলামের বিধান হলো আল্লাহ সিফাতি নাম কারো রাখলে তার পূর্বে আবদুল যোগ করতে হবে। যার অর্থ গোলাম, বান্দা নতুবা গুনাহ হবে। যেমন—আব্দুল মুমিন, আব্দুল কুদ্দুস। বর্তমান সমাজে কিছু মানুষ না বুঝেই নিজ সন্তানের ডাক নাম রাখেন রাব্বি! আবার সকলে তাকে এই নামেই ডেকে থাকে। রাব্বি মানে কি আমরা জানি? রাব্বি মানে রব বা পালনকর্তা যা আমরা মহান আল্লাহকে সম্ব্বোধন করে ডেকে থাকি। তাহলে শুধু রাব্বি নামে ডাকা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। অবশ্যই নামের পূর্বে ফজলে/গোলাম যোগ করতে হবে। একজন মানুষের প্রিয় সম্পদ তার নাম। নাম বিকৃতি মানুষটির জন্য অপমান এবং কষ্টের। গরিব, কাজের লোক অথবা শত্রু, যেই হোক না কেন, তাকে ছোট করে না ডাকি। মানুষের নামকে নিয়ে ব্যঙ্গ করার মতো হীন কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখি।

    লেখক : শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ৪:৪০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২০

    shikkhasangbad24.com |

    advertisement

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    ০১ সেপ্টেম্বর ২০২০

    advertisement
    শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
     
    ১০
    ১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
    ১৮১৯২০২১২২২৩২৪
    ২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
    advertisement

    সম্পাদক ও প্রকাশক : জাকির হোসেন রিয়াজ

    সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: বাড়ি# ১, রোড# ৫, সেক্টর# ৬, উত্তরা, ঢাকা

    ©- 2023 shikkhasangbad24.com all right reserved