• বুধবার ৩১শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

    শিরোনাম

    বাড়ির আঙিনায় খুন যুবলীগ নেতা

    অনলাইন ডেস্ক | ১২ নভেম্বর ২০২০ | ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ

    বাড়ির আঙিনায় খুন যুবলীগ নেতা

    প্রতিদিনের মতো গতকাল বুধবার সকাল ৮টার দিকে স্ত্রীকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মোটরবাইক নিয়ে বের হন। বাড়ির সামনের রাস্তায় বাইকেই বসে ছিলেন তিনি। স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী এসে বাইকে উঠবেন, ঠিক এর আগমুহূর্তে চার-পাঁচটি মোটরবাইক দ্রুত সেখানে আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হেলমেট পরা ব্যক্তিরা তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে চলে যায়। স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে আসার আগেই সব শেষ।

    কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বাজার এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহত ব্যক্তির নাম জিল্লুর রহমান (৪৮)। তিনি ২০১৬ সালে এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ওয়ার্ড যুবলীগের আসন্ন কাউন্সিলে তিনি সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে। জিল্লুর একই এলাকার মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে।

    পুলিশ একে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখছে। এর পেছনে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আছে বলে তারা মনে করছে। নিহতের স্বজনদেরও অভিযোগ, রাজনৈতিক গ্রুপিং-দ্বন্দ্বেই খুন হয়েছেন জিল্লুর।

    চোখের সামনে স্বামীর এই হত্যাকাণ্ড দেখে শোকে পাথর হয়ে পড়েছেন স্থানীয় তারাপাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা জাহানারা বেগম। ঘটনার পর সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মর্গের সামনে নিস্তব্ধ বসে আছেন তিনি। চোখ থেকে কেবল অশ্রু ঝরছে। পাশেই বুক চাপড়ে চিৎকার করছেন তাঁদের বড় ছেলে। তার ‘বাবা বাবা’ চিৎকারে সেখানে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। জিল্লুর-জাহানারার তিন ছেলে ও এক মেয়ে।

    হাসপাতালে উপস্থিত জিল্লুর রহমানের চাচাতো ভাই কাউসার জানান, সকালে লোকজনের চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, জিল্লুর রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সকাল ৮টার দিকে রাস্তায় লোকজন খুবই কম ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী সেভাবে পাওয়া যায়নি। তবে দু-একজন জানান, মোটরবাইকগুলো যেদিক দিয়ে এসেছিল, তার বিপরীত দিক দিয়ে সেগুলো দ্রুত চলে যায়। তাঁরা মোটরবাইকের সঠিক সংখ্যা বলতে না পারলেও চারটির বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন।

    ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এমদাদুল হক বলেন, জিল্লুর রহমানের এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

    সদর দক্ষিণ থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন মাস আগে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হাসান ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করা মামলার আসামি ছিলেন জিল্লুর। ১৫ দিন কারাগারে থেকে গত ১ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।

    কাউন্সিলর হাসান ও নিহত যুবলীগ নেতা ভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও এলাকায় আধিপত্য ও রাজনৈতিক গ্রুপিং নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

    কুমিল্লার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এখানে রাজনৈতিক ইস্যু আছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব আছে। আমরা সব বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।’

    তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ঘটনাস্থলে ছিলেন, তিনিই প্রধান সাক্ষী। তাঁর ভাষ্য ও অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যায় জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। যার যে পরিচয়ই থাকুক না কেন, হত্যাকারীকে হত্যাকারী হিসেবেই দেখা হবে।’

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০২০

    shikkhasangbad24.com |

    advertisement

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    advertisement
    শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
     
    ১০১১১২
    ১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
    ২০২১২২২৩২৪২৫২৬
    ২৭২৮২৯৩০৩১ 
    advertisement

    সম্পাদক ও প্রকাশক : জাকির হোসেন রিয়াজ

    সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: বাড়ি# ১, রোড# ৫, সেক্টর# ৬, উত্তরা, ঢাকা

    ©- 2023 shikkhasangbad24.com all right reserved