• বুধবার ৩১শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

    শিরোনাম

    নারীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেল করাই তার ‘পেশা’

    অনলাইন ডেস্ক | ১৭ নভেম্বর ২০২০ | ৮:৫২ অপরাহ্ণ

    নারীদের সঙ্গে প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেল করাই তার ‘পেশা’

    ঘটনার শিকার নারীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলেন মোহাম্মদ ইয়াসিন ওরফে রাতুল। একদিন কয়েক বন্ধু মিলে লঞ্চে করে বেড়াতেও গিয়েছিলেন। পরে সদরঘাটে নেমে ওই নারীর ফোন নিয়ে চম্পট দেন। একান্ত ব্যক্তিগত ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে শুরু করেন প্রতারণা।

    অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের সদস্যরা ইয়াসিনকে বাংলামোটর থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছে থাকা প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেলে ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন সেট, ১০টি সিম উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, ইয়াসিন মুঠোফোনে চারটি ফেক ফেসবুক আইডি এবং নয়টি জিমেইল অ্যাকাউন্ট চালাতেন। এগুলো ব্যবহার করে তিনি নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। কখনো কখনো অ্যাপের মাধ্যমে নারীকণ্ঠে কথা বলেও প্রতারণা করতেন তিনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াসিন অপরাধের দায় স্বীকার করেন।

    সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, ভুক্তভোগী নারী কয়েক দিন আগে সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ জানান। এরপরই পুলিশ নজরদারি শুরু করে। তারা অভিযোগের সত্যতা পায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শাহজাহানপুর থানায় ইয়াসিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন বাদী। মঙ্গলবার ইয়াসিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।

    মোহাম্মদ ইয়াসিন ওরফে রাতুলের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একতারপুরে। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে তিনি ঢাকার মিরপুরে চলে আসেন। মিরপুরের স্থানীয় এক নেতার বাসায় চা–নাশতা দেওয়ার কাজ করতেন। পরে মোহাম্মদপুরের রিংরোডের এক দোকানে বিক্রয়কর্মীর চাকরি নেন। হঠাৎ চাকরি ছেড়ে দিয়ে অপরাধের পথে পা বাড়ান। নারীদের সঙ্গে প্রতারণাই হয়ে ওঠে তাঁর আয়ের একমাত্র উৎস।

    ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে ইয়াসিনের মাস ছয়েক আগে বন্ধুত্ব হয়। তাঁরা ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় দেখা করতেন। একদিন ইয়াসিন তাঁকে চাঁদপুরে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। ওই নারী তাঁর দুই বন্ধুসহ লঞ্চে চাঁদপুরে যান। লঞ্চেই কোনো এক সময় কৌশলে ইয়াসিন তাঁর নগ্ন ভিডিও ধারণ করেন। লঞ্চ থেকে ঢাকায় নামার পর ইয়াসিন তাঁকে বলেন, তাঁর মুঠোফোনে টাকা নেই। একটা ফোন করা প্রয়োজন। তারপর ভুক্তভোগীর মুঠোফোন থেকে কথা বলার নাম করে সদরঘাট থেকে তিনি সটকে পড়েন। ওই নারী অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেন। পরে ইয়াসিন তাঁর মোবাইলে থাকা বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে নেন। পরদিনই ফোন করে বলেন, ২৫ হাজার টাকা না দিলে তাঁর নগ্ন ভিডিও ছড়িয়ে দেবেন। তাঁর ফেসবুকও ইয়াসিন ব্যবহার করতে থাকেন। টাকার জন্য একপর্যায়ে ভুক্তভোগী নারীর বাবা–মাকেও হুমকি দেন।

    সিআইডি আরও একজন ভুক্তভোগীর তথ্য পায়। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মাস ছয়েক আগে তানজুমা আফরোজ নামের এক ইউটিউবারের আইডি থেকে তিনি বন্ধুত্বের অনুরোধ পান। সরল বিশ্বাসে জনপ্রিয় ইউটিউবারের অনুরোধে সাড়া দেন ওই নারী। তারপর তাঁরা ফেসবুকে চ্যাট করেন এবং কথাও বলেন। কথা বলার সময় ইয়াসিন বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে নারীকণ্ঠে কথা বলতেন।

    বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ওই ছাত্রী জানতেও পারেননি তানজুমা আফরোজ আসলে ইয়াসিনের ফেক আইডি। তানজুমা আবার তাঁকে ইয়াসিনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

    হোয়াটসঅ্যাপে তাঁরা কথা বলতেন। একপর্যায়ে ইয়াসিন প্রেমের অভিনয় করে ওই ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও সংগ্রহ করেন। দেখা করার কথা বলে তিনি ভুক্তভোগী নারীর মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যান। মুঠোফোন ফরম্যাট করে বিক্রি করে দেন। আর নিজের ফোন থেকে ওই নারীর ফেসবুক, জিমেইল অ্যাকাউন্ট দখলে নিয়ে ব্যবহার করতে থাকেন।

    সিআইডি ইয়াসিনকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর মুঠোফোন থেকে অন্তত ১০ জন ভুক্তভোগীর তথ্য পায়। তাঁদের প্রত্যেকেরই নগ্ন ভিডিও ছিল ওই সব মুঠোফোনে। এর বাইরেও প্রতারণায় ব্যবহৃত নানা ধরনের অ্যাপ ও টেকনোলজি পাওয়া যায়।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ৮:৫২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০২০

    shikkhasangbad24.com |

    advertisement

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    advertisement
    শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
     
    ১০১১১২
    ১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
    ২০২১২২২৩২৪২৫২৬
    ২৭২৮২৯৩০৩১ 
    advertisement

    সম্পাদক ও প্রকাশক : জাকির হোসেন রিয়াজ

    সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: বাড়ি# ১, রোড# ৫, সেক্টর# ৬, উত্তরা, ঢাকা

    ©- 2023 shikkhasangbad24.com all right reserved