• শনিবার ১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

    শিরোনাম

    জাবিতে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির

    অনলাইন ডেস্ক | ২০ নভেম্বর ২০২১ | ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ

    জাবিতে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির

    জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রতিবারের মতো এবারও শীত বার্তা নিয়ে আসতে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে বাহারি প্রজাতির অতিথি পাখি। শীত মৌসুম শুরু হলেই ক্যাম্পাসের লেকে এসব ভীনদেশী পাখিদের আনাগোনা শুরু হয়। পাখিরা প্রকৃতির প্রাণ। পাখিরা সবসময় নিরিবিলি ও কোলাহল মুক্ত পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে।

    জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরিবিলি পরিবেশ থাকায় প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে ছুটে আসা অতিথি পাখি তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে এই ক্যাম্পাসের লেকগুলোকেই বেছে নেয়।

    প্রতিবারের মতো এ বছরও বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক, রেজিস্ট্রার ভবন সংলগ্ন লেক, ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার ও সুইমিংপুল সংলগ্ন লেকে পাখি আসতে শুরু করেছে। তাদের কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে লেক পার। লেক ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ পাখিই সরালি বা হাঁস প্রজাতির। যারা পানিতে থাকতে পছন্দ করে এবং পানির মধ্যে থেকেই বিভিন্ন গুল্ম উদ্ভিদ ও পোকামাকড় খুঁজে খায়।

    পাখি গবেষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ক্যাম্পাস লেকে যে পাখি গুলো দেখা যাচ্ছে তা ছোট সড়ালি প্রজাতির। শীতের আবহ বাড়ার সাথে সাথে অতিথি পাখির সংখ্যাও বাড়বে। আশা করছি গতবারের মতো এবারও ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে অন্যান্য সকল প্রজাতির পাখিরাও চলে আসবে।

    পাখি সমাদৃত লেকের নিরাপদ পরিবেশের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষা চলমান থাকায় লেক পারে জনকোলাহল বেড়েছে। এ কারণে জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক ও রেজিস্ট্রার ভবন সংলগ্ন লেকে পাখির সংখ্যা কমে গেছে। পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে পাখিরা আবার ফিরে আসবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকেও পাখিদের নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করতে হবে।

    প্রচণ্ড শীত আর খাদ্য সংকটে অস্তিত্ব রক্ষায় হাজার মাইল পথ অতিক্রম করে ছুটে আসে বাংলাদেশের মতো কম শীতপ্রধান দেশগুলোতে। প্রতিবছর নভেম্বর মাসে হিমালয়ের উত্তরে অবস্থিত শীত প্রধান দেশগুলো যেমন সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, হিমালয় অঞ্চলের প্রচন্ড শীত ও ভারি তুষারপাতে টিকতে না পেরে পরিযায়ী পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে নাতিশীতোষ্ণ প্রধান অঞ্চলগুলোতে চলে আসে।

    নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল হওয়ায় বাংলাদেশে প্রতি বছর অসংখ্য প্রজাতির পাখির আগমন ঘটে। দেশের যেসব স্থানে অতিথি পাখির বিচরণ ঘটে তার মধ্যে অন্যতম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শীতের রেশ কেটে গেলেই বসন্তের সময়টাতে এসব পরিযায়ী পাখি আবারও তাদের চিরচেনা ভূমিতে ফিরে যায়।

    প্রতিবছর শীতের পুরোটা সময়ে ক্যাম্পাসের লেকে ও জঙ্গলে বালিহাঁস, লেঞ্জা, জলপিপি, সরালি, বড় সরালি, ছোট সরালি, পাতারি, চখাচখি, খঞ্জনা, চীনা, পান্তামুখী, পাতি হাঁস, পানিমুরগি, নর্থগিরিয়া, কমনচিল, কটনচিল, পাতিবাটান, পান্তামুখী, বুটি হাঁস বৈকাল, নীলশীর ও আরও নাম না জানা ২০৫ প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এদের মধ্যে রয়েছে ১২৬ প্রজাতির দেশীয় পাখি।

    এদিকে ২০১৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে অতিথি পাখিদের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। তবে সম্প্রতি বছরগুলোতে ক্যাম্পাসের লেকগুলো অতিথি পাখিদের থাকার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। লেক পারে জনকোলাহল আর যানবাহনের শব্দে লেকে পাখি থাকার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এজন্য বিগত কয়েকবছর ধরে অতিথি পাখি কম আসতে শুরু করেছে। করোনা মহামারীর কারণে গতবছর ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় জনকোলাহল কম ছিল, তাই অতিথি পাখি এসেছিল বেশী। এবারও আসতে শুরু করেছে পাখি। তবে এখনই পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত না করা গেলে অতিথি পাখি ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে লেকের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করণে যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

    Facebook Comments Box

    বাংলাদেশ সময়: ৮:৪৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১

    shikkhasangbad24.com |

    advertisement

    এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

    advertisement
    শনিরবিসোমমঙ্গলবুধবৃহশুক্র
     
    ১০১১১২১৩১৪১৫১৬
    ১৭১৮১৯২০২১২২২৩
    ২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
    advertisement

    সম্পাদক ও প্রকাশক : জাকির হোসেন রিয়াজ

    সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: বাড়ি# ১, রোড# ৫, সেক্টর# ৬, উত্তরা, ঢাকা

    ©- 2023 shikkhasangbad24.com all right reserved